শুক্রবার, ২০ মে ২০২২, ০৪:২৯ পূর্বাহ্ন
নুরুল আলম:: বহুল আলোচিক মেজর (অব) সিনহা মো: রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফ থানা পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও ৬জনের যাবজ্জীবন ও ৭জনের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমান না হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালতের বিচারক।
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
জানাযায়, ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিস্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী সহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
৪ মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে র্চাজসিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকান্ডকে পরিকল্পিত ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০২১ সালের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২৩ আগস্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। এ মামলায় মোট ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষর নেওয়া হয়েছে।
হত্যাকান্ডের ১৮ মাসের মাথায় এ রায় দিলেন আদালত। একই সঙ্গে ৬ আসামির যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৭জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীব দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এস আই) নন্দদুলাল রক্ষিত ও বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব এবং টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো: নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
এছাড়া রায়ে বাকি সাতজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালতের বিচারক। খালাস প্রাপ্তরা হলেন- বরখাস্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো: শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো: রাজীব ও মো: আব্দুল্লাহ।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস জানান, দুই প্রধান আসামির ফাসিঁর রায়ের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে কিন্তু সাতজনের খালাস নিয়ে আছে অসন্তোষ। বহুল আলোচিত এই মামলায় রায় ঘোষণার সময় সকাল থেকেই কক্সবাজার আদালতে ছিলেন মামলার বাদী শারমিন। রায়ের পর পর আদালত থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। শারমিন বলেন, প্রত্যাশা ছিল মামলার প্রধান দুই আসামির যেন সর্বোচ্চ সাজা হয়।
অন্যদিকে, রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ওসি প্রদীপের আইনজীবী সমীর দাশগুপ্ত বলেছেন, আমরা ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম। পরিকল্পিত যে ষড়যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষই সেটা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা আইনত দন্ডণীয় অপরাধ।
Leave a Reply