রবিবার, ০৪ Jun ২০২৩, ১০:৫৭ অপরাহ্ন
নুরুল আলম: পার্বত্য অঞ্চলে সেনা বাহিনীর শিক্ষা উন্নয়ন কার্যক্রম: শহিদ লেঃ জি এম মুশফিকুর রহমান, বীর উত্তম। পার্বত্য জেলায় সেনাবাহিনী পাহাড়ী বাঙ্গালী সকল সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করছে। নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ধর্মীয় উপাসনালয় স্থাপন সংস্কার ও মেরামত করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, সংস্কার, মেরামত ও শিক্ষাসংক্রান্ত সহায়তা প্রদান, খেলাধুলা উন্নয়ন, পানীয় জলের ব্যবস্থা, বিভিন্ন দূর্যোগে ক্ষতিগ্রসস্থদের জন্য বসতবাড়ি নির্মান ও বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সহায়তা চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী ও অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র বা হাসপাতাল ইত্যাদি মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এমনই একটি উন্নয়ন কার্যের স্বাক্ষী হয়ে আছে গুইমারায় রিজিয়নের অধীনে “শহীদ লে: মুশফিক উচ্চ বিদ্যালয়”।
শহিদ লেঃ জি এম মুশফিকুর রহমান, বীর উত্তম: ২৫ ডিসেম্বর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী হতে কমিশন লাভ করে ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে যোগদান করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের কাসালং রিজার্ভ ফরেষ্ট এলাকায় চেলাছড়া নামক জায়গায় কাউন্টার ইন্সারজেন্সি অপারেশনে নিয়োজিত থাকাকালীন অবস্থায় তিনি গত ০৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ সালে ৩ ঘটিকায় শান্তিবাহিনীর ঘাটি ধ্বংসের জন্য একটি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। অভিযানে নেতৃত্য প্রধাণের সময় হঠাৎ শান্তিবাহিনীর পাল্টা গুলি এসে এই বীর সেনানীর বুক ঝাঝরা করে দেয় গুরুতর আহত হবার পরও লেঃ মুশফিক কঠিন মনোবল ও নেতৃত্বের গুনাবলী অভিযান পরিচালনা করে শান্তি বাহিনীর ঐ ঘাটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করেন।
আতিরিক্ত রক্তক্ষয়ের কারনে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হওয়া সত্বেও তিনি ধীর স্থির ভাবে অধীনন্থ সকলকে দায়িত্ব পালনে উৎসাহ দেন এবং ০৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ সালে সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।এই অভিযানে কঠোর মনোবল, সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শনের তাকে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরবর্তীতে মরনোত্তর “বীর উত্তম” খেতাবে ভূষিত করা হয়। উল্লেখ্য যে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনিই সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব পেয়েছেন। অকুতভয় দেশপ্রেমিক এই তরুন অফিসারের আতœত্যাগেকে চিরস্মরনীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে ১৩ আগষ্ট ২০০০ তারিখে তার নামে গুইমারায় শহিদ লেঃ মুশফিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রতিষ্ঠিত করা হয়।
২ হাজার সালের ১৩ আগষ্ট বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কালাম শাহেদ ndc, psc। বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান পৃষ্ঠ পোষক মেজর জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার awc, psc। পৃষ্ঠ পোষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ কামরুজ্জামান ndc, psc। সভাপতি, লেঃ কর্ণেল গোলাম ফজলে রাব্বী psc। প্রধান শিক্ষক মোঃ হাকিম উদ্দীন শেখ BSC,B.Ad।
বর্তমানে উক্ত স্কুলে প্রাইমারী ও হাই শাখায় প্রায় ৪ শতাধীক শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। জেএসসি পরীক্ষা ২০১৬তে ২৩ জন অংশ গ্রহণ করে এবং শতভাগ পাশ করে। তার মধ্যে (জিপিএ৫) পেয়েছে ১ জন, (এ) পেয়েছে ১৯ জন ও (এ-) পেয়েছে ৩ জন। পিএসসিতে ২০ জন অংশ গ্রহণ করে ও পাশের হার শতভাগ। (জিপিএ৫) পেয়েছে ৩ জন, (এ) পেয়েছে ১৪ জন ও (এ-) পেয়েছে ২ জন (বি) পেয়েছে ১ জন।
শহিদ লেঃ মুশফিক বিদ্যালয়ে এখন কর্মরত শিক্ষক, কর্মচারীর সংখ্যা: প্রাইমারী শাখায় ৪ জন ও হাই শাখায় ১২ জন শিক্ষক রয়েছে, অফিস সহকারী ১ জন, আয়া ৩ জন, পিয়ন ১ জন কর্মরত রয়েছেন।
তার পাশাপাশি গুইমারা রিজিয়নের মসজিদের পাশে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ও বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। যা সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে বিশাল অবদান রাখছে। এছাড়াও শুধু গুইমারায় নয় পুরো পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলায়, ব্রিগেট, জোন, সাবজোন ও প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও অস্থায়ী বা স্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে সেনাবাহিনীর। শীত কালীন মৌসুমে শীতার্থদের মাঝে কম্বল বিতরণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করে যাচ্ছে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা আইনত দন্ডণীয় অপরাধ।
Leave a Reply