রঙিন পর্দার আড়ালে এক প্লেট চটপটির মূল্য সাড়ে ৩শ’ টাকা

Reporter Name

গাজীপুরের কালীগঞ্জে স্থানীয় ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে চলছে নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ড। এমন অভিযোগ স্থানীয় সচেতন মহলের। মহলটির দাবি, নানা বয়সের শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে স্কুল-কলেজের জন্য বের হয়ে ওইসব ফাস্টফুডের দোকানগুলোর রঙ্গিন পর্দার আড়ালে তাদের অন্ধকার ভবিষ্যৎ তৈরি করছে। আর উঠতি বয়সের ওইসব শিক্ষার্থীদের উস্কে দিতে স্থানীয় ফাস্টফুড ব্যবসায়ীরা ব্যবসার নামে করছে সময় বিক্রি। তারা প্রতি ঘণ্টায় ১ প্লেট চটপটির মূল্য রাখছে সাড়ে ৩শ’ টাকা।

সচেতন মহলের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌর এলাকার পুরাতন ব্যাংকের মোড়, নতুন ব্যাংকের মোড়, বাসস্ট্যান্ড এবং পুরাতন গরুর হাট এলাকায় বেশ কয়েকটি ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে। যেগুলোতে স্কুল-কলেজের নানান বয়সের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত যাতায়াত করছে। আর সেখানে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় অতিবাহিত করছে। শিক্ষার্থীদের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে উস্কে দিচ্ছে ফাস্টফুড ব্যবসায়ীরাও। কারণ শিক্ষার্থীরা যত বেশি সময় অতিবাহিত করছে তারা ততবেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চটপটি আর ফুচকার ব্যবসার আড়ালে ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের কাছে সময় বিক্রি করছে। একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা দিনের পর দিন রঙ্গিন পর্দার আড়ালে নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। অন্যদিকে তাদের এহেন কর্মকাণ্ডে বিভ্রান্ত হচ্ছে সচেতন মহল।

Fucka-(2)

সরেজমিনে মিলেছে অভিযোগের সত্যতা। কালীগঞ্জ পুরাতন গরুর হাট এলাকায় সরেজমিনে দুইটি ফাস্টফুডের দোকানে দেখা গেছে, দোকানের সামনে চটপটি ও ফুচকার আয়োজন। আর পেছনে নানা রঙ্গের পর্দা দিয়ে আটকানো কয়েকটি কক্ষ। সেখানেই প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে স্কুল-কলেজের নানা বয়সী ছাত্র-ছাত্রীরা ভিড় করছে। শুরুতে ফুচকা-চটপটি খেলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে সময় অতিবাহিত। আর স্কুল-কলেজ ছুটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা বেরিয়ে যায়। এখানে শুধু যে স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী তা নয়। দূর-দূরান্ত থেকেও আসছে নানা বয়সী মানুষ। সময় শেষ হলেই বিভিন্ন হারে ঘণ্টা প্রতি রাখছে টাকা। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালায় কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহাগ হোসেন। অভিযানের খবর পেয়ে দু’টি দোকানের মালিক কর্মচারী রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় দোকানের কর্মচারীসহ ৬ জনকে আটক করা হয়।

এদের মধ্যে ২ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ। এরা হলেন, উপজেলার নাগরী গ্রামের গোপাল সাহার ছেলে লিমন সাহা (২৫), ফিরিন্দা গ্রামের মো. জামান করিমের ছেলে রুবেল মিয়া (৩০), অলুয়া গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে তারেক (৩০), ভাইয়াসূতি গ্রামের কানাই চন্দ্র দাসের মেয়ে প্রিয়সী চন্দ্র দাস (১৮), দক্ষিণ পানজোরা গ্রামের হরি দাসের মেয়ে মিতু রাণী দাস (১৯) ও দোকান কর্মচারী আসিফ মিয়া (১৯)।

এ সময় মাহবুব ইসলাম মালিকানাধীন মাহবুবা জান্নাত স্টোর এবং মো. মামুন মিয়া মালিকানাধীন নামবিহীন দোকানে তালা ঝুলিয়ে দোকানের মালামাল জনসম্মুখে পুড়িয়ে দেয়া হয়। পরে আটকদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন হারে জেল-জরিমানা করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© 2019, All rights reserved.
Developed by Raytahost
error: Content is protected !!