রবিবার, ০৪ Jun ২০২৩, ০১:০৭ অপরাহ্ন

স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় দু’স্ত্রীর “বিয়েই নেশা মাসুদের”

স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় দু’স্ত্রীর “বিয়েই নেশা মাসুদের”

নিজস্ব প্রতিবেদক:: একের পর এক বিয়ে করা, প্রতারণা,একাধিক অভিযোগ উঠেছে মাসুদ নামের এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। পদ-পদবীতে কিন্তু তিনি ড্রাইভার নন। দপ্তরি হিসেবে নিয়োগ হলেও বর্তমানে তিনি চালাচ্ছেন গাড়ি। যেখানেই যান তিনি একের পর এক বিয়ে আর স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ-পোষন না দিয়ে তাদের উল্টো অভিযোগ তুলে স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই আবার বিয়ে করায় যেন তার পেশা ও নেশায় পরিণত হয়ে উঠেছে।

এমনি অভিযোগ উঠেছে খাগড়াছড়ি জেলাধীন পানছড়ি উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী মাসুদ এর বিরুদ্ধে। দপ্তরি হিসেবে কাজ শুরু করলেও বর্তমানে তিনি চালান ইউএনও গাড়ী। এমনটিই জানিয়েছে মাসুদের দুই স্ত্রী কুলছুম আরা বেগম ও মাহামুদা বেগম।

একাধিক বিয়েসহ নানা অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক ও ইউএনও কাছে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান অভিযুক্তর স্ত্রী’রা। তবে এতে তেমন কোন ফল হয়নি বরং মাসুদের হুমকির শিকার হচ্ছে বলে জানান স্ত্রীরা। তাই অভিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় অভিযোগকারীরা।

জানা যায়, মাসুদের বিরুদ্ধে ইউএনও’র পক্ষ থেকে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি বলে দাবী করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে ভাঙ্গবে আমাদের সংসার। উৎসাহিত হবে এই অপরাধী মাসুদও।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাসুদ পানছড়ি উপজেলা পরিষদে দপ্তরির চাকরী হলেও সে দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার অধিনস্থ সরকারী গাড়িতে বে-আইনিভাবে ড্রাইভার হিসেবে কাজ করছে। তার প্রথম স্ত্রীর কুলসুম আরা বেগম তার বাড়ি দীঘিনালা। প্রথম স্ত্রী কুলসুম আরা এর পরিবারের বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ৫জন। আর এই ৫জন্য সদস্যের জন্য মাসুদ মিয়া প্রতিমাসে মাত্র ৫ হাজার টাকা ভরণপোষণ বাবদ দেন বলে জানান তার স্ত্রী। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের প্রতারণাসহ বিয়ে করার সময় নানা মিথ্যা তথ্য ও প্রলোভন দেওয়ারও অভিযোগ করেন তার স্ত্রীরা।

তিনি আরো বলেন, আমার এক মেয়ে ইয়াসমিন ১০ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করেন এবং অন্য এক সন্তান বিবাহিত বেকার। সম্পূর্ণ কিছুই ৫ হাজার টাকার উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও ইতিপূর্বে লক্ষীছড়ি বদলি হয়ে ২য় বিয়ে করে মাহমুদাকে। তার সংসারে দুুটি সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে আবার মাটিরাঙা উপজেলায় বদলি হয়ে আসছে। সেখানেও সে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে।

এর পর ১ম স্ত্রী কুলসুম আরা ও ২য় স্ত্রী মাহমুদা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বিষয়টি পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিস্তারিত তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার স্ত্রীদের ডেকে ভরণপোষণ দেওয়ার জন্য মাসুদ কে বলে দেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ভরণপোষণ এবং ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার জন্য কোন খরচাধী না দিয়ে অশালিন ভাষায় গালি ও হুমকি দিচ্ছে বলে জানান মাসুদের ২য় স্ত্রী।

অপরদিকে পানছড়িতে গিয়ে দেড় বছর আগে বিয়ে করে কুনছুম কে। অভিযোগের বিষয়ে মাসুদের দপ্তরি থাকা অবস্থায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বজনপ্রীতির কারনে বিয়ের পূর্বে কুনছুম কে ঘর বরাদ্দ দেওয়া সুযোগ করে দেওয়ার পর তাকে মাসুদ বিবাহ করে বলে জানান স্ত্রীরা। বর্তমানে তার ৩য় স্ত্রী সরকারি ঘরের ডিজাইন পরিবর্তন করে বসবাস করছেন।

এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, এ বিষয়ে মাসুদকে তার স্ত্রীর অভিযোগির প্রেক্ষিতে ভরন-পোষনের ঠিকমত চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান। তবে সে তা না মানলে তার স্ত্রীদের আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। একই সাথে কারো পারিবারীক বিষয়ে হস্থক্ষেপ করার এখতিয়ার নেয় বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে একাধিক বিষয়ে অভিযুক্ত পানছড়ি ইউএনও (দপ্তরি) ড্রাইভার মো: মাসুদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করলেও পারিবারীক সম্পর্ক নিয়ে তার স্ত্রীদের দায়ী করেন। একই সাথে দপ্তরীর স্থলে ড্রাইভারী করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন তিনি।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা আইনত দন্ডণীয় অপরাধ।

Design & Developed BY Muktodhara Technology Ltd