শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়িতে প্রভাবশালীদের প্রভাবে পাহাড় কাটার মহাৎসব চলছে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়ির পার্বত্য জেলা। পাহাড়ে ঘেরা এই জনপদে সম্প্রতি পাহাড়ের মাটি কাটায় জড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকটি চক্র। নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও জরিমানা করা সত্ত্বেও থামছে না পাহাড়ের মাটি কাটার মহাৎসব ।
গত ছয় মাসে ছোট-বড় অন্তত ৪০টি পাহাড়ের একাংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। পুকুর ও আবাদি জমি ভরাট উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণের নামে এসব পাহাড় ও টিলা কেটে নেওয়া হচ্ছে।
পাহাড় কাটার এমন কয়েকটি ঘটনায় সাবেক ও বর্তমান একাধিক জনপ্রতিনিধির নাম উঠে আসে। তবে তাঁরা উন্নয়নের দোহাই দিয়ে এবং নিজের প্রয়োজনের কথা বলে দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি মানিকছড়ি উপজেলার গচ্ছাবিল, ডাইনছড়ি, বাটনাতলী, তিনটহরী, গোদাতলী, বড়ডলু, মুসলিমপাড়া ও এয়াতলংপাড়ায় গিয়ে অবাধে পাহাড় কাটার ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, রাস্তা, মসজিদ, মন্দির নির্মাণের নামে এসব পাহাড় কাটা হয়। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা খননযন্ত্র (ড্রেজার) এবং শ্রমিক দিয়ে
পাহাড় কেটে নিচ্ছেন। তবে শ্রমিকেরা জড়িত কারও নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
জেলার মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, মহালছড়ি, দীঘিনালা, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, রামগড়, পানছড়িতে চলছে অসব পাহাড় কাটা। সরকারি নিদের্শ অমান্য করে একাধারে পাহাড় কাটলেও প্রশাসনের নেই কোনো নজর দারি। পাহাড় কাটা ছাড়াও চলছে একের পর এক অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। একাধিকবার জাতিয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরও প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।
সম্প্রতি পাহাড় কাটা সংক্রান্ত বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দায়ের করলেও এখনো পর্যন্ত কোনো সুস্থ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। কেন এর সুরহা মেলেনি সেই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সচেতন মহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘রাস্তা উন্নয়নের সুযোগে মাটি ব্যবসায়ীরা সক্রিয়। রাস্তা সংস্কারের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে পাহাড় বা টিলা থেকে কাটা মাটি তাঁরা নিয়ে যান।
‘
এসকল অবৈধ পাহাড় কাটা সংক্রান্ত বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার’রা অবগত থাকলেও নিচ্ছে না কোনো প্রকার আইনগত ব্যবস্থা। সংবাদ পত্রের সাংবাদিকরা এসকল কর্মকর্তাদের বক্তব্য নিতে অনিহা প্রকাশ করছে। কেননা এসকল কর্মকর্তারা মুখে বলে এক কথা কাজের বেলায় ভিন্নি। যেসব এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে সেসকল এলাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের অবগত করে সংবাদ প্রকাশ করলেও পাহাড় কাটা বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেয়নি এসকল কর্মকর্তারা।
এছাড়াও ফসলি জমি থেকে পাহাড় কেটে বিভিন্ন বিভিন্ন ইটভাটায় ব্যবহার করছেন। যার ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যারা মাটি কেটে নিয়ে যায় তারা এতই প্রভাবশালী যে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন হয়রানী এমন মামলা হামলার স্বীকার হতে হয় অসহায় প্রতিবাদকারীদের। প্রশাসন তার কর্তৃব্য পালনে সক্রিয় না হলে অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটা ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। ফসলী জমি র্নিবিগ্নে নষ্ট হবে। তাই দ্রুত এসকল বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান সচেতন মহল।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা আইনত দন্ডণীয় অপরাধ।
Leave a Reply