সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০৬:২৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:: পার্বত্য জেলায় অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার মহাৎসব চলছে। খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবনের বিভিন্ন উপজেলায় সরকারি নিয়মনীতি অমান্য করে অনুমতি বিহীন ছোট-বড় পাহাড় কেটে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের নিকট মাটি বিক্রয়ে মেতে উঠেছে পাহাড় খেকোরা। এত এত অপরাধ হওয়ার পরও প্রশাসনের নিরব ভূমিকার কারণে পাহাড় খেকোরা সুযোগ পেয়ে তাদের অসকল অবৈধ কাজের পরিমান বাড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়িত।
খাগড়াছড়ি জেলার, দিঘীনালা, মাটিরাঙ্গা, পানছড়ি, মানিকছড়ি, রামগড়, লক্ষ্মীছড়ি মহালছড়িতে চলছে পাহাড় কাটার মহাযজ্ঞ। কবে বন্ধ হবে এসকল অবৈধ পাহাড় কাটা এই নিয়ে জনসচেতন মহলের মাঝে তীব্র ক্ষোভ এবং প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে প্রশাসন সম্মূখে। একের পর একে জনবসতি পূর্ণ এলাকায় যেখানে পাহাড়ের উপরে এবং নিচে সাধারণ মানুষের বসবাস সে সমস্ত এলাকায় ছোট-বড় পাহাড় কেটে মরণ ফাঁদ সৃষ্টিতে মেতে উঠেছে এসকল পাহাড় খেকো অসাধু ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয় বর্তমানে ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রয় করছে মহলটি। এই নিয়ে বার বার সংবাদ প্রকাশের পর যেন কোন এক অদৃশ্য শক্তির কারণে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে এসব অসাধু মাটি ব্যবসায়ী ও পাহাড় খেকোরা। তাদের খুটির জোর কোথায় জানতে চায় স্থানীয় সচেতন মহল।
সম্প্রতি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার শালবন মোহাম্মদপুর এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড় কাটার অপরাধে মো: নুরুল ইসলাম নামক এক ব্যক্তিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, রাজস্থলি সহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় একাধারে শত শত পাহাড় কেটে নিচ্ছে অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা। সূত্রে জানা যায়, ইটভাটার মালিকদের নিকট বিক্রয় হয় এসব মাটি। প্রতি ট্রাক মাটি বিক্রয় হচ্ছে ১হাজার ৫শত থেকে ২ হাজার টাকা দরে। সূত্রে আরো জানায়, স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধ ভাবে মাটি কাটার সাহস যোগাচ্ছে। যার কারণে প্রশাসন এক প্রকার নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে।
অন্যদিকে বান্দরবানের আলিকদম, থানচি ও নাইক্ষ্যংছড়িতে চলছে সরকারি নিদের্শ বিহীন অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার হিরিক। পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বার বার সংবাদ প্রকাশের পরও প্রশাসন শুনেও না শুনার ভান করছে। অভিযোগ দিলে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে পাশ কেটে নেন প্রশাসন। এভাবে চলতে থাকলে বর্ষারদিনে পাহাড় ধ্বসে ব্যপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটার আসংখ্যা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার বিষয়ে সচেতন মহল বলেন, দিন দিন অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটা বেড়েই চলেছে। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে এবং স্বার্থনীশি একটি মহল নিজের স্বার্থ হাছিলের জন্য ছোট বড় পাহাড় কেটে ঝুকির মুখে ফেলছে পাহাড়ের উপরে এবং নিচে বসবাস করা অসহায় মানুষদের। সম্প্রতি কয়েক বছর আগের দেখা যায় খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে পাহাড় ধ্বসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এভাবে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলে অদুর ভবিষ্যতে আবারো তার চেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনার ঘটার আশঙ্কার রয়েছে। তাই যারা এই সকল অবৈধ কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উদ্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানান।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক বলেন, অবৈধভাবে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে আসছে শক্তিশালি ঘূর্ণিঝর “মোখা” মোকাবেলা করতে হবে। যাতে কোনো প্রকার অপৃতিকর ঘটনা না ঘটার জন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় যারা বসবাসরত অবস্থায় আছেন তাদের নিরাপদ স্থানে যেতে হবে। যারা পাহাড়ের উপরের বসবাস করছেন এবং পাহাড়ের নিচের বসবাস করছেন তাদের সকলকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য বলেন তিনি।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা আইনত দন্ডণীয় অপরাধ।
Leave a Reply