শিরোনাম
মা‌টিরাঙ্গায় বাজার ম‌নিট‌রিং ও জ‌রিমানা পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের দিবস উদযাপন উপলক্ষে যামিনীপাড়া জোন কর্তৃক অনুদান প্রদান ২৭তম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের বর্ষপূতি উপলক্ষে সিন্দুকছড়ি জোনের মানবিক সহায়তা ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে হলে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে পার্বত্য চুক্তি নিয়ে খাগড়াছড়িতে নাগরিক ও জেএসএস পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি গুইমারাতে সম্প্রীতি সভা অনুষ্ঠিত মাটিরাঙ্গায় মাদ্রাসার সুধী ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত “খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে মতবিনিময় সভা” প্রশাসনের উপর ভর করে স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায়ন টিকে ছিলো ১৮ বছর পর রাঙামাটি পৌর জামায়াতের কর্মী সম্মেলন

পাহাড়ে বাড়ছে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ

Reporter Name

নুরুল আলম: পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। শহরের আশাপাশের এলাকাগুলোতে ডেঙ্গুর প্রভাব বিস্তার হলেও দুর্গম উপজেলাগুলোতে দেখা দিয়েছে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব। ফলে এই দুটি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ছোট-বড়সহ সকল বয়সের মানুষ। জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর চাপ বাড়াতে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। তবে নিয়মিত ঔষধ ও চিকিৎসা নেওয়ায় অনেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, বান্দরবান সদর, থানচি, লামা ও আলীকদম উপজেলার দুর্গম এলাকাগুলোতে বেশীর ভাগই আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগে। থানচি ও আলীকদম দুই উপজেলায় তিন্দু, রেমাক্রী, বড় মদক, কুরুকপাতা, ক্রাসিং পাড়াসহ প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে সঠিকভাবে ঔষধ ও চিকিৎসা না পাওয়ায় দেখা দিয়েছে ম্যালেরিয়া প্রাদুর্ভাব। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে মশারি প্রদান করা হলেও সেটিতে ব্যবহার না করায় দিন দিন ম্যালেরিয়া রোগে আক্রন্তের সংখ্যা বাড়ছে । এসব রোগে আক্রান্ত বেশীর ভাগই শিশু। তাছাড়া সেসব এলাকায় জুমে কাজ করে ফেরার পর রাতে ঘুমানো সময় মশারি ব্যবহার করলেও মাচাং তল থেকে মশা কামরে শিকার হন শিশুরা। অন্যদিকে জেলা সদরে আর্মিপাড়া, বনরুপা, মেম্বার পাড়া, কাশেম পাড়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ফলে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলেও অনেকে বাড়ি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন আবার অনেকেই হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে সুস্থ হয়ে উঠেছে অধিকাংশ মানুষ।

অপরদিকে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার তেমন প্রকোপ দেখা না গেলেও পাহাড়ি এলাকাগুলোতে কয়েকজনের ম্যালেরিয়া হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকা হওয়ায় আশপাশে বনজঙ্গল থেকে ডেঙ্গু মশা জন্ম নেয়।

হাসপাতাল তথ্যনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৭ জন ও ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ২১ জন। তারমধ্যে ডেঙ্গু রোগে সুস্থ ১৩ জন ও ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছে ২০ জন। তবে থানচি, লামা ও আলীকদম এই তিনজন উপজেলায় ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশী রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রোগে পরীক্ষা করতে আসছেন কয়েকশত মানুষ। তবে অধিকাংশ এই রোগে আক্তান্ত হচ্ছে শিশুরা। এই দুই রোগে আক্তান্ত হয়ে কেউ ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে, আবার কেউ বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে আতঙ্ক না হওয়ার পাশাপাশি সঠিকভাবে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, থানচি, আলীকদম ও লামা এই তিন উপজেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেশী রয়েছে। চলতি বছরের জুন থেকে কয়েক হাজার মানুষ ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। তবে দুর্গম এলাকাগুলোতে এই সংখ্যা আরও বেশি হবে ধারণা করছেন চিকিৎসকেরা। বলছেন, দুর্গম এলাকার মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যন্ত আসে না। যখন অবস্থা গুরুতর হয়, তখন আসে। এদিকে প্রতিদিন জেলা সদরে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে রোগীরা।

সাইদুল, মসাদ্দেকসহ কয়েকজন ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রোগে আক্তান্ত রোগীরা জানান, শরীর ও মাথা ব্যাথা, বমি বমি ভাব নিয়ে হাসপাতালে পরীক্ষা করতে এসেছি। পরীক্ষা করে দেখি ম্যালেরিয়া আবার অনেকের ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়েছে। এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ঔষুধ খেয়ে যাচ্ছি, এখন কিছুটা সুস্থ লাগছে।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) মো. তারেকুল ইসলাম জানান, মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব থাকে। কেননা এখন যেহেতু বর্ষা মৌসুম সেহেতু ম্যালেরিয়া বেশী। সরকার থেকে যেসব মেডিসিনযুক্ত মশারি দেওয়া হয় সেগুলো যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করলে ম্যালেরিয়া প্রাদুর্ভাব কমে আসবে।

বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. মো মাহাবুবুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমে মানুষ ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত বেশি হন। তবে থানচি, আলীকদম ও লামা এই তিন উপজেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশী হলেও অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন। আর জেলা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া নিয়ে ভর্তি হলেও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে অনেকে। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে এ রোগ থেকে সুস্থ হওয়া যায়। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই বলেও জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© 2019, All rights reserved.
Developed by Raytahost
error: Content is protected !!