শিরোনাম
খাগড়াছড়িতে শিক্ষক হত্যার বিচারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি মাটিরাঙ্গায় গভীর রাতে বসত বাড়িতে আগুন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে গুইমারা উপজেলা প্রশাসনের উদ্ভাবনী উদ্যোগ গুইমারাতে সংঘাত, নৈরাজ্য ও অস্থিরতার বিরুদ্ধে সম্প্রীতি সমাবেশ খাগড়াছড়িতে স্কুল শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা: প্রতিবাদে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত: ১৪৪ ধারা জারি সিন্দুকছড়ি জোনের পক্ষ থেকে মানবতা ও সমাজ কল্যাণে বিশেষ সহায়তা প্রদান খাগড়াছড়ি গুইমারা বাজার পরিচালনা কমিটি গঠন “৯৯” এস.এস.সি- ব্যাচ মহালছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ‘পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী সরকারকে সহযোগিতা করছে’ গুইমারায় সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল

বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযান: গঠনতন্ত্র বহির্ভূত কাজে জড়ালেই ছাড় নেই

Reporter Name

খাগড়াছড়িতে বহিষ্কারের হিড়িক

নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ির বিএনপিতে শুরু হয়েছে শুদ্ধি অভিযান। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডে নেয়া হচ্ছে ব্যবস্থা। এরই মধ্যে গোপনে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম,দখলবাজী,চাঁদাবাজিসহ বিরোধী শক্তির সাথে যুক্ত থেকে অনৈতিক সুবিধা নেয়া,গঠনতন্ত্র অমান্য করলেই ছাড় দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার। তিনি বলেন, কোন ধরনের অনিয়মে সংগঠনের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি শাস্তিমুলক ব্যবস্থা হিসেবে এরই মধ্যে অন্তত ডজন খানিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার ও পদ স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়ও নেয়া হয়েছে নানা শাস্তির ব্যবস্থা। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয়রা। খাগড়াছড়ি জেলা-উপজেলার সাধারন মানুষ জানান, বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকে বিরোধী শক্তির সাথে আতাত করে সাধারন মানুষকে কৌশল অবলম্বণ করে কষ্ট দিয়েছে এবং দলীয় বঞ্চিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কাজ করার পাশাপাশি ব্যবসায়ীক পার্টনার হয়ে অর্থ-সম্পদ অর্জন,হামলা-মামলায় উস্কানি দেয়া,গোপনে ক্ষতি সাধনের সাথে কাজ করেছে এমন নেতার সংখ্যা কম নয়।

দীর্ঘ সময় ধরে যারা দলের একনিষ্ঠ রাজনৈতিক আর্দশ নিয়ে থেকেছেন তাদের কোণঠাসা করে হয়রানীসহ সর্বশান্ত করারও নজির আছে। সময় উপযোগি এ সিধান্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির কর্ণধার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াদুদ ভূইয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা।

খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও ৯ উপজেলায় অনেকের বিরুদ্ধে রয়েছে, একাধিক ভয়ঙ্কর সব অভিযোগ। যারা দলের দূ-সময়ে নিজের রাজনৈতিক চরিত্র সাদা পোশাকে ঢেকে ভেতরে ভেতরে জনপ্রতিনিধি বনে যাওয়াসহ ভিন্ন দলে যোগ দেওয়ার ঘটনাও নতুন কিছু নয়। এ ধরনের ঘটনায় উপজেলা ভিত্তিক তদন্ত কমিটি করে দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে ভুক্তভোগিরা।

দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ৫’ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান হয়। এরপর থেকে পাল্টে যায় দেশের পরিস্থিতি,প্রেক্ষাপট। আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতাকর্মীরা রোষানলে পড়ার ভয়ে অনেকে দেশত্যাগ করেছে আবার অনেকে জেলা ছেড়ে অন্যত্র গাঁ ঢাকা দেয়। এরই মধ্যে একটি পক্ষ ঐ সময়কে বেঁচে নিয়ে তাদের ঘর-বাড়িতে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠে।

এসব ঘটনার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মী শর্তক এবং সাধারন মানুষকে সজাগ থেকে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপিকে জানাতে মাইকিংও করে। দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিরাপদ রাখতে রাত জেগে পাহারা দেয়। এতো কিছুর পরও সাধারন মানুষের মধ্যে স্বস্থি ফিরলেও এখনো কাটেনি ভয়-আতঙ্ক।

এদিকে-সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগেরপর খাগড়াছড়িতে বিএনপি নামধারী কিছু সুবিধাবাদী খাগড়াছড়িতে নানা ভাবে হুমকি-ধামকি,চাঁদাবাজি ও দখলবাজি শুরু করে। বিষয়টি নজরে আসলে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে শর্তক অবস্থান নিয়ে শুরু হয় শ্রদ্ধি অভিযান।

জানা যায়, ৫’ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর খাগড়াছড়ির অরাজক পরিস্থিতি ঠেকাতে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি কঠোর অবস্থান নেন। সব ধরনের অপতৎপরতা রোধে দলীয় নেতাকর্মীসহ ছাত্র-জনতাকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয় খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভুইয়ার নির্দেশে। করা হয় শহরে মাইকিং। নিরাপত্তবাহিনীর আন্তরিকতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এ সময় ছাত্র-জনতা ও মাঠে জামায়াতের সক্রিয়তা ছিলো চোখে পড়ার মতো।

এদিকে দীর্ঘ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক অস্থিরতায় যেমন জনরোষের ভয়ে আতঙ্কিত। তেমনি পরবর্তী সময়ে মামলায় গ্রেপ্তার,আটকের ভয় এলাকা ত্যাগিরা বর্তমানে বাড়ি-ঘর ছাড়া। অন্যদিকে বিক্ষুব্দ জনতাও দীর্ঘ সময়ের বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে বাজার সিন্ডিকেট বার্ণিজ্য,অনিয়ম,দুর্নীতি,মার্কেট দোকান প্লট দখল,বসত ভিটা দখল,প্রভাব বিস্তার,মামলায় জড়িয়ে আসামী করায় সাধারন জণগনের অসন্তোষ আর ক্ষোভে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে অভ্যুত্থানের পর।

এদিকে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে মানিকছড়ি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন,সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন, মানিকছড়ি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব বেলাল হোসেনকে বহিষ্কার ও মানিকছড়ি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেনের সদস্য পদ স্থগিত করে দলীয় প্যাডে জানানো হয়।

নাম প্রকাশ না শর্তে বিএনপির একাধিক ত্যাগী নেতা আক্ষেপ করে জানান, হামলা-মামলা শিকার হওয়া থেকে সহায়-সম্পদ হারিয়ে সর্বশান্ত হলেও কেউ খোঁজ নেয়নি। এ সময় তারা বলেন ত্যাগিরা অভিমানি হয়,বেইমান নয়। আর যারা একাকার হয়েছে তারা কোটি হয়ে উঠলেও তারা সেই অর্থ-সম্পদ দিয়ে কি করবে এমনো ক্ষোভের প্রকাশ ঘটে তাদের বক্তব্যে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সময় উপযোগি এমন সিধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার বলেন, দলে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে খাগড়াছড়ি বিএনপি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ত্যাগীরা মূল্যায়ন অবশ্যই পাবে। সুবিধাবাদীদের জায়গা বিএনপিতে হবে না। যারা দলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছে বিএনপি তাদের বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© 2019, All rights reserved.
Developed by Raytahost
error: Content is protected !!