নুরুল আলম:: ৭২ ঘন্টার অবরোধে খাগড়াছড়িতে ছেড়ে যাচ্ছেনা কোন যানবাহন। এখনো অজানা আতঙ্ক কাটছেনা পাহাড়ে। আটকা পড়েছে সাজেকসহ খাগড়াছড়ি জেলা শহরের বিভিন্ন স্পর্টে ঘুরতে আসা পর্যটকরা।
থমথমে পরিস্থিতিতে পার্বত্যাঞ্চলের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে প্রশাসন। জোরদার করা হয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল। একই সাথে টহল দিচ্ছে বিজিবি,পুলিশ সদস্যরা।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪) সকাল থেকে আগামী ৭২ ঘন্টার টানা অবরোধে সড়কে আশঙ্কা নিয়ে ভোগান্তিতে সাধারন মানুষ। অন্যদিকে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উচ্চ প্রতিনিধি দল রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি,দীঘিনালায় সহিংসতাস্থল পরির্দশনের আসার কথা রয়েছে।
অবরোধে অভ্যান্তরিক সড়কে তেমন কোন গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে খাগড়াছড়ি শহরের প্রাণ কেন্দ্র শাপলা চত্বর,আদালত সড়ক,বাস টার্মিনাল,চেঙ্গি স্কোয়ার,মধুপুর সড়কসহ আশপাশের ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বড় ধরনের কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন এর মো. আব্দুল মোমিন বলেন, পরিবহন শ্রমিক,সাধারন যাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সাথে যানবাহনে পরিস্থিতি বিবেচনায় গাড়ি চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি শান্ত করতে জেলাজুড়ে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসন কাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিকেলে প্রতিনিধি দল আসলে বিষয়টি নিলে আলোচনার কথা জানান তিনি।
উল্লেখ যে, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪) ভোর ৪ টার দিকে খাগড়াছড়ির নোয়াপাড়া-নিউজিল্যান্ড সড়কে এক ব্যক্তির মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় মো. মামুন নামের এক যুবক বৈদ্যুতিক পিলার এর সাথে ধাক্কা খায় বলে নিশ্চিত খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মো. আব্দুল বাতেন মৃধা।
এ ঘটনার পর তাকে স্থানীয়রা আটক যুবককে মারধর করে। সে ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাকে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর আবাসিক মেডিকেল অফিসার তার মৃত্যু আগেই হয়েছে বলে জানান।
পরে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে খাগড়াছড়িতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও জেলা সদরের স্বনির্ভর এলাকায়। পরে তা রাঙামাটিতেও সংঘাতে রূপ নেই। এতে দু’জেলায় ৪ যুবক নিহত হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে (আনুমানিক সাড়ে ১০টার পর) খাগড়াছড়ি সদরের নারাঙহিয়া, উপালি পাড়া ও স্বনির্ভর এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরে রাতে ১২ জনকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়। চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। তবে কাদের গুলিতে এ ঘটনা ঘটেছে তা কেউ নিশ্চিত করেনি প্রশাসন।
হত্যাকাণ্ডের অভিযোগর উত্তাপ ছড়িয়ে পড়লে দীঘিনালায় এঘটনার জেরে লারমা স্কোয়ারে বাজারের ১০২টি অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। একই ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে খাগড়াছড়িতেও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির ঘটনার জেরে অশান্ত হয়ে উঠে পার্বত্য জনপদ।
শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি সদরের ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিলো বলে নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এদিকে-উত্তপ্ত পাহাড়ে শেষ নেই ভীতি-উদ্বেগ-উৎকন্ঠার। ফলে আতঙ্কিত বসবাসরতরাদের মধ্যে। অজানা আতঙ্কে ভীত সাধারন মানুষ।
Leave a Reply