নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার পশ্চিম বড়পিলাক নামক স্থানে পূনর্বাসিত প্রজাদের জায়গা জ্বালজালিয়াতি করে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার সোলেমান শেখ ও তার ছেলে দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, গুইমারার পশ্চিম বড়পিলাক এলাকায় সর্বপ্রথম বাঙালি পরিবার হিসেবে রিজিয়া বেগমদের পূনর্বাসিত করা হয়। যার বন্দোবস্ত মামলা নং ৮৪৮৪/৮০-৮১ এর মাধ্যমে হোল্ডিং নং -৩০৪ মূলে ১নং চৌহর্দ্দিতে ২.৫০ একর এবং ২নং চৌহর্দ্দিতে ২.৫০ একর মোট ৫ একর ৩য় শ্রেণির ভূমি রিজিয়া বেগমকে বন্দোবস্ত কবুলিয়ত প্রদান করা হয়। কিন্তু বন্দোবস্ত পাওয়ার সময় রিজিয়া বেগম শুধু মাত্র ১নং চৌহর্দ্দির ২.৫০ এর ভূমি দখল বুজে পায়। সে সময় থেকেই রিজিয়া বেগম র্দীঘ ৪০/৪৫ বছর যাবৎ পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে।
সম্প্রতি স্থানীয় সোলেমান শেখ ও তার ছেলে দ্বীন ইসলাম জায়গাটি তাদের বলে দাবি করে। ভূয়া কাগজপত্রাদী দেখিয়ে অবৈধ ভাবে অন্যের জায়গা আত্মসাৎ করাই তাদের এক মাত্র লক্ষ্য বলে অভিযোগকারী জানায়। স্বৈরাচার সরকার আওয়ামীলীগের শাসনামলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এই সোলেমান ও দ্বীন ইসলাম অসহায় মানুষদের জায়গা-জমি জ্বালজালিয়াতী করে আত্মসাত করে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ভাবে মামলা-হামলা করে হয়রানী করেছে। ইতোমধ্যেই দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিম বড়পিলাক এলাকার রফিকুল ইসলামের বাড়িতে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা ও লুটপাটসহ একজনকে মারত্মকভাবে আহত করার অভিযোগে গুইমারা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
ভূমিদস্যূ দ্বীন ইসলাম ও তার পিতা সোলেমান শেখ উক্ত জায়গাটি তাদের জায়গা বলে দাবি করে ৬ জনের নামে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর আদলতে মামলা দায়ের করে। যার সি আর মামলা নং-৬৯/২০২২। উক্ত মামলার তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে দায়িত্ব প্রদান করা হলে পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) সিরাজুল ইসলাম সরেজমিনে তদন্ত করে ম্যাপ ও সাক্ষীদের পাশাপাশি স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা, মোসা: রিজিয়া বেগম, মো: হাকিম উদ্দিন শেখ, নজরুল ইসলাম, মো: বাবুল মিয়া, মো: আবু বক্কর এর বিরুদ্ধে দ্বীন ইসলামের করা অভিযোগটির কোনো সত্যতা নাই বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপরও দ্বীন ইসলাম ও তার পিতা সোলেমান একের পর এক মামলা দিয়ে অসহায় পরিবারদের নিঃস্ব করে দিচ্ছে বলে অভিযোগে জানায়।
অভিযোগকারী রিজিয়া বেগম জানান, পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কারণে উক্ত বন্দোবস্ত প্রাপ্ত ভূমি থেকে মোহাম্মদ হাকিম উদ্দিন শেখ এর নিকট ০.১৫ (পনের শতক) একর, মো: বাবুল মিয়া এর নিকট ০.২০ (বিশ শতক) একর, মো: জহিরুল ইসলাম এর নিকট ০.১৫ (পনের শতক) একর, আব্দুল কাদের এর নিকট ০.৫০ (পঞ্চাশ শতক) একর, মো: মাঈন উদ্দিন এর নিকট ০.৪২ (বিয়াল্লিশ শতক) একর এবং মো: রুহুল আমিন এর নিকট ০.৪০ (চল্লিশ শতক) একর ৩য় শ্রেণির জমি বিক্রয় করে। ৬ জনের নিকট সর্বমোট ১.৮২ একর ভূমি বিক্রয় করে। বর্তমানে দ্বীন ইসলাম ও তার পিতা সোলেমান শেখ জ্বালজালিয়াতি করে জমি আত্মসাতের চেষ্টা করছে। তাদের কাগজপত্রের চৌহুর্দির সাথে কোনো মিল নেই। এছাড়াও তাদের কাগজে যাদের থেকে জায়গা ক্রয় করেছে উল্লেখ আছে তাদেরকে এই এলাকার কেউই চিনে না এমনকি কখনো দেখেনি।
দ্বীন ইসলামের দায়ের করা অপর এক মামলা সংক্রান্ত বিষয় আদালত সূত্রে জানা যায়, বিবিধ মামলা নং- ০৪/২৩ এর আদেশ মূলে জেলা প্রশাসক কর্তৃক বন্দোবস্তি মামলা বাতিল করে। উক্ত বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে রিজিয়া বেগম এর দায়ের করা দেওয়ানী মামলা নং- ১৪২/২৪ এর গত ৬ অক্টোবর ২০২৪ তারিখের আদেশ মূলে নথি তলব এবং স্থগিতাদেশ দেন।
উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে অভিযুক্ত দ্বীন ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানায়, আজিম উদ্দিন, মাইন উদ্দিন ও বেলাল হোসেন আমাদের রেকর্ডীয় জায়গা জোরপূর্বক দখল করে র্দীঘদিন যাবৎ ভোগ দখল করছে। তাদের উচ্ছেদের জন্য আমি ৬/৭ মাস পূর্বে আদালতে মামলা দায়ের করি। জায়গা সংক্রান্ত বিষয় বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি দেখা হলে বিস্তারিত বলবে বলে ফোনটি কেটে দেয়।
স্থানীয় সচেতন মহল বলেন, সোলেমান শেখ ও তার ছেলে দ্বীন ইসলাম দুষ্ট প্রকৃতির লোক। স্থানীয় অসহায়দের জায়গা জমি দখল করে হয়রানী করাই তাদের একমাত্র কাজ। এদের অত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
Leave a Reply