শিরোনাম
পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের দিবস উদযাপন উপলক্ষে যামিনীপাড়া জোন কর্তৃক অনুদান প্রদান ২৭তম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের বর্ষপূতি উপলক্ষে সিন্দুকছড়ি জোনের মানবিক সহায়তা ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে হলে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে পার্বত্য চুক্তি নিয়ে খাগড়াছড়িতে নাগরিক ও জেএসএস পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি গুইমারাতে সম্প্রীতি সভা অনুষ্ঠিত মাটিরাঙ্গায় মাদ্রাসার সুধী ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত “খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে মতবিনিময় সভা” প্রশাসনের উপর ভর করে স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায়ন টিকে ছিলো ১৮ বছর পর রাঙামাটি পৌর জামায়াতের কর্মী সম্মেলন ইউপিডিএফ এবং জেএসএসের মধ্যে গোলাগুলি, আহত অন্তত ৫

পাহাড়ে কাঠ পাচারের অভিযোগ, দৃষ্টিপাত নেই প্রশাসনের

Reporter Name

নুরুল আলম:: পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিবেশের ভারসাম্য, জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার স্বার্থে লাইসেন্স ছাড়া সব ধরনের গাছ কাটা ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। তারপরও চোরাকারবারিরা স্থানীয় প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে মোটা অংকের চাঁদা দিয়ে দিনে ও রাতে নিয়মিত পাচার করছে কাঠ।

জানা গেছে, গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া, সিন্দুকছড়ি, হাফছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি, রামগড় হতে প্রতিদিন বিভিন্ন মাধ্যমে চাঁদা দিয়ে পাচার হচ্ছে সেগুন, গামারিসহ বিলুপ্তপ্রায় পাহাড়ি গাছ। গাছ কেটে পাহাড়গুলো শূন্য করে ফেলছে অবৈধ কাঠ চোরাকারবারি সিন্ডিকেট৷ প্রশাসনের ছত্রছায়ায় এসব কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট সক্রিয়। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন হুমকির সম্মুখীন তেমনি দিনদিন পাহাড় ধসের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সর্বত্র এ নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিরাতে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে নিষিদ্ধ কাঠ ও লাকড়ি বোঝাই শতাধিক গাড়ি চলাচল করে। বেপরোয়া গতির নিষিদ্ধ কাঠ ও লাকড়ি বোঝাই এসব গাড়ি যেকোনো মুহুর্তে কেড়ে নিতে পারে প্রাণ। সম্প্রতি গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক নামক এলাকায় বেপরোয়া গতির কাঠবোঝাই গাড়ি উল্টে গাছের চাপায় ২ জনের মৃত্যু হয়৷

স্থানীয়রা জানায়, প্রতিফুট কাঠের জন্য ১০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। ৫ হাজার ফুট কাঠ হলে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। বৈধ হোক আর অবৈধ হোক সব ধরনের কাঠ থেকে চাঁদা আদায় করা হয়। পাহাড়ে একটি মুরগী বিক্রি করলে যেখানে চাঁদা দিতে হয় সেখানে চাঁদা ছাড়া পাহাড়ের ভেতর থেকে কাঠ নিয়ে আসা কোনোভাবেই সম্ভব নই। আর পাহাড়ের এসব কাঠ পাচার রোধে বন বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নেই কোনো তৎপরতা। পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় অবৈধ কাঠ পাচার বন্ধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর ভূমিকা পালন করা উচিত।

পাহাড়ের ভেতর থেকে অবৈধ কাঠ, লাকড়ি নিয়ে আসতে চাঁদাবাজদের মাসিক, বাৎসরিক বা এককালীন চাঁদা পরিশোধ করে টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। চাঁদা দিতে হয় ক্রেতা-বিক্রেতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে। এভাবেই চাঁদা নিয়ে আঞ্চলিক সন্ত্রাসী দলগুলোর দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। এই অন্তবর্তীকালীন সরকার থাকা অবস্থায় যদি পাহাড়ি আঞ্চলিক সন্ত্রাসী দলগুলোর অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি ভেঙে দেওয়া না হয় রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় চলে আসলে এসব অসাধু কাঠ চোরাকারবারীদের মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাবে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কাঠের মিলে অবৈধ কাঠের বিপুল সমাহার৷ যেনো দেখার কেউ নেই। মিলগুলোতে মজুত করা রয়েছে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পাহাড়ি বিলুপ্ত গাছের কাঠ। এসব কাঠ চোরাকারবারিরা যখন নিয়ে আসে তখন বিপুল পরিমাণ চাঁদা দিতে হয় আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠন ও কাঠ সমিতিকে। নিষিদ্ধ কাঠের গাড়ি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগা দিয়েই চলে যায়৷ অবৈধ কাঠ পাচার নিয়ে তীব্র সমালোচনা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে কোনো ভ্রুক্ষেপ বা দৃষ্টিপাত নেই। চাঁদাবাজ ও অবৈধ কাঠ ধরতে তাদের যতো অনীহা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, অবৈধ কাঠ পাচারে বন বিভাগ জড়িত রয়েছে। সবার সম্পৃক্ততায় অবৈধভাবে কাঠ পাচার হয়। এভাবেই অবৈধভাবে কাঠ পাচার হতে থাকলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় আঞ্চলিক দলগুলো অবৈধ কাঠের চাঁদা দিয়ে অস্ত্র কিনে ব্যবহার করছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।

খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জোতপারমিট করা হচ্ছে। জোতপারমিটের মাধ্যম যেসব টিপি এবং ছাড়পত্র দিয়ে কাঠ ট্রাকে বোঝাই করে সমতলে পাচার করে থাকে। সেখানে কাগজে কলমে চারশত থেকে সাড়ে চারশত ঘনফুট ও কোন কোন ক্ষেত্রে আর কম-বেশ থাকে। তবে সাইজের সাথে কাঠের কোনো মিল থাকে না। অতিরিক্ত বোঝাই করে ৫শত থেকে ৬শত ফিট কাঠও লোড করে অবৈধভাবে সমতলে পাচার করে থাকে। এসব কাজে পাচার কাজে জরিত সমিতি ও অসাধু বন কর্মকর্তা জরিত রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

খাগড়াছড়ি থেকে ফেনী হয়ে ঢাকা-কমিল্লা, মানিকছড়ি থেকে ফটিকছড়ি হয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন কাঠ ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করা হয়। এসব বিষয় বন বিভাগের ফরেস্ট চেকপোষ্টগুলো মোটা অংকের টাকা নিয়ে টিপি ও ছাড়পত্র যাচাই না করে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়।

খাগড়াছড়ি বন বিবাগীন কর্মকর্তা, রামগড় ও গাড়িটানা রেঞ্জ কর্মকর্তার সাথে গাছ পাচার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© 2019, All rights reserved.
Developed by Raytahost
error: Content is protected !!